কোন ছাগলের প্রজনন সবচেয়ে বেশি - লাভজনক
সবচেয়ে বেশি লাভজনক ছাগল
হ্যালো বন্ধুরা যারা ছাগল পালন বা ছাগলের খামার দিতে চাচ্ছেন কিন্তু বুজে উঠতে পারতেছেন না যে, কোন জাতের ছাগল পালন করলে সবচেয়ে বেশি লাভজনক করা যায়। কোন জাতের ছাগল সবচেয়ে বেশি প্রজনন দিয়ে থাকে। ছাগল প্রজনন এর জন্য সবচেয়ে বেশি লাভজনক কিছু ছাগল রয়েছে, যেগুলো ১৪ মাস এ দুইবার বাচ্চা দিয়ে থাকে এবং ১ থেকে ৪ টি বাচ্চা পযন্ত দিয়ে থাকে । নিচে কিছু ছাগলের প্রজনন এবং সবচেয়ে বেশি লাভজনক ছাগলগুলোর বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলো।
সূচনাঃ
- বৈশিষ্ট্য,
- প্রজনন,
- বাসস্থান,
- খাদ্য,
- খাওয়ানো পদ্ধতি,
- পানি,
- রোগ-বালাই,
- প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশ ও ভারত এর মধ্যে প্রায় সব অঞ্চলে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল জনপ্রিয়। যদিও ছাগলের নাম ব্ল্যাক বেঙ্গল হলেও , ধূসর,সাদা এবং বাদামী বর্ণের ছাগল পাওয়া যায়। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের লোম নরম হয় এবং এদের আকার ছোট হয়। ব্ল্যাক বেঙ্গল পুরুষ ছাগলের ওজন সাধারণত ২৫-৩০ এবং নারী ছাগল এর ওজন ২০-২৫ পযন্ত হয়ে থাকে। এদের উচ্চতা ৫০ সেন্টিমিটার পযন্ত হয়ে থাকে, বেশি বাচ্চা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে এই ছাগল বেশি চাহিদা।
প্রজনন
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জন্মের সময় বেশি মারা যায় না, যেখানে অনন্য ছাগল জন্মের সময় ২০-৩৫% ছাগল মারা যায় আর ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ৫-১০% । ১৪ মাস এ দুইবার বাচ্চা দিয়ে থাকে এবং ১ থেকে ৪ টি বাচ্চা পযন্ত দিয়ে থাকে। যে জন্য ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল প্রজনন এর জন্য সবচেয়ে বেশি লাভজনক।
বাসস্থান
সাধারণ পরিবেশ এর মতো পরিষ্কার পরিছন্ন এবং আলো বাতাস থাকে এমন পরিবেশ এ ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল রাখা ভালো। এতে করে ছাগলের কোনো অসুবিধা ও ছাগল অসুস্থ হয় না। ছাগল রাখার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন একটু করে ফাকা থাকে এতে ছাগলের থাকার সুবিধা হয়।
খাদ্য
সবচেয়ে বেশি লাভজনক করার জন্য সঠিক খাদ্য সরবরাহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ । সাধারণ গ্রাম অঞ্চলে যেসব ছাগল পালন করা হয় তাদের আঁশযুক্ত খাদ্য দিতে লাগে না কারন বিভিন্ন যায়গায় মুক্ত চড়ে বনে ছাগল গুলো তাদের পছন্দ মতো খাদ্য গ্রহন করে থাকে, যার জন্য না যানতেই তারা আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহন করে থাকে ফলে তাদের আর আলাদাভাবে আঁশযুক্ত খাদ্য দিতে লাগে না।
যে সকল ছাগল খামার পদ্ধতিতে পালন করা হয় সে সকল ছাগলকে আঁশযুক্ত খাদ্য দিতে হয়। কারন অনন্য ছাগলের মতো মুক্ত চড়ে ফসলের নষ্ট হওয়া আঁশযুক্ত খাদ্য খতে পারে না। তাই তাদের পরিকল্পিত মাত্রা অনুযায়ী আঁশযুক্ত খাদ্য সরবরাহ দিতে হবে । বর্ষার সময় বিভিন্ন গাছের পাতা ও সবুজ ঘাস আঁশযুক্ত খাদ্য হিসাবে দিতে হবে। যে সকল খামারি আছেন তাদের জন্য বিভিন্ন নেপিয়ার ঘাস করতে পারেন।
শুধু আশযুক্তত খাদ্য ছাগলের সকল পুষ্টি মেটাতে পারে না, তাই তাদের দানাদার খাদ্য ও দিতে হবে । দানাদার খাদ্য হতে পারে চালের কুরা-ভুট্টা-গমের ভুষি ছোলা-খেসারি ভাঙা, তিলের খৈল, সরিষার খৈল, ভিটামিন, খনিজ লবণ, আয়োডিনযুক্ত লবণ এসকল সঠিক মাত্রা ও পরিমান অনুযায়ী খাওয়ালে লাভ বেশি হবে।
খাওয়ানো পদ্ধতি
আশযুক্ত খাদ্য পরিমান মতো দিনে দুইবার বা তার বেশি সরবরাহ করা যেতে পারে। তবে দানাদার খাদ্য খাওয়া কিছু পরিমান আছে ৮০ গ্রাম করে সকাল বিকাল দিনে দুই বার মোট ১৬০ গ্রাম খাদ্য সরবরাহ করতে হবে এটা কিন্ত প্রাপ্ত বয়স্ক ছাগীর জন্য।
আর ছাগীর বাচ্চার জন্য যেগুলো তিন মাসের বেশি তাদের জন্য ১০০ গ্রাম দুইবার সকাল বিকাল ৫০ গ্রাম করে দিতে হবে। সময়ের সাথে ছাগল বৃদ্ধি হওয়ার খাদ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে। বয়স অনুযায়ী ছাগলের খাদ্য সরবরাহ করতে হয় । আপনি খাদ্যের তালিকা করতে পারেন যেটা করলে আপনার অনেক সুবিধা হবে।
পানি
পানি আমরা সবাই পান করে থাকি পানি ছাড়া কোনো প্রাণীর বাচা অসম্ভব, তবে খেয়েল রাখতে হবে যে আমরা যেমন বিশুদ্ধ পানি পান করি তেমনি ছাগলের জন্য বিশুদ্ধ পানি পান করা দরকার। তাছাড়া ছাগলকে ভাতের মার খাওয়াতে পারেন কারন ভাতের মাড়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ, ভিটামিন পাওয়া যেটা ছাগলের বৃদ্ধির জন্য কার্যকর।
রোগ-বালাই
সকল ছাগলের জন্য একটি প্রধান রোগ হচ্ছে PPR যেটাকে জীবন ঘাতি রোগ বলা যায় । ৩-৬ দিনের মধ্য ছাগলের শরিরে জীবাণু প্রবেশ করে । এটা বুঝা যায় ছাগলের শরিরে জর আসবে ১০৫°-১০৭°F। লক্ষ্য করবেন ছাগলের মুখে নাকে লালা তরল পদার্থ দেখা যাবে। কিছু দিন পর ঘা ও হলুদ বর্ণ হয়ে শুকিয়ে যাবে। ছাগলের চোখের পাতা ফুলে যাবে । PPR এই রোগ হলে ছাগলের শ্বাসকষ্ট হয় । প্রাপ্ত বয়স্ক ছগলের থেকে এ রোগ বাচ্চাদের বেশি হয়।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসাঃ
PPR রোগ দেখা দিলে আপনাদের প্রথম কাজ হবে অনন্য সকল ছাগল থেকে রোগী ছাগলকে আলাদা করা। PPR রোগের জন্য ভ্যাকসিন দিতে হয় বছরে ১বার করে এই ভ্যাকসিন দিলে এই রোগ হয় না। এই রোগ এর কোনো সঠিক মেডিসিন হয় না । তাই ছাগল মারা গেলে ৮ ফুট গর্ত করে পুতে মাটি দিতে হবে।